নীলাদ্রি লেক

Niladri Lake

নীলাদ্রি লেক: লেকটি স্থানীয় লোক জনের কাছে পাথর কোয়ারী নামে পরিচিত। ১৯৪০ সালে এই খোয়াটি থেকে ১ম পাথর উত্তোলন শুরু হয়। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর ১৯৬০ সালে আবার নতুন করে এই খোয়াটি থেকে পাথর উত্তোলন শুরু হয়, তার ঠিক ৬ বছর পর ১৯৯৬ সালে কতৃপক্ষ প্রকল্পটি লোকসানি প্রকল্প দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়। নীলাদ্রি লেকের (Niladri Lake) অবস্থান সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টেকেরঘাট নামক স্থানে। বর্তমানে লেকটি শহীদ গেরিলা যোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বীর বিক্রম এর নামে নামকরণ করা হয় “শহীদ সিরাজ লেক”। লেকের নীল পানি, এক পাশে সবুজ ঘাসের চাদরে মোড়ানো ছোট ছোট টিলা আর অন্য পাশে বিশাল পাহাড় আপনাকে বিমোহিত করবে। নিলাদ্রী লেকের এই স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের জন্য অনেকেই একে বাংলার কাশ্মীর বলে থাকে।

যেভাবে আসবেন নীলাদ্রি লেক

নীলাদ্রি লেকে দুইভাবে আসা যায়। ০১. সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হয়ে ০২. নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হয়ে। আপনার সুবিদা অনুযায়ী যেকোন একটি রুটে ভ্রমণ করতে পারেন। অথবা এক রুটে প্রবেশ করে অন্য রুটে বের হয়ে যেতে পারেন।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হয়েঃ রাজধানী ঢাকার মহাখালী, সায়দাবাদ, ফকিরাপুল বাস ষ্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি ভালো বাস সুনামগঞ্জের ছেড়ে আসে। শ্যামলী এন আর, শ্যামলী এস পি ও মামুন পরিবহন সায়দাবাদ ও ফকিরাপুল থেকে সুনামগঞ্জের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসে। উত্তরা বা তার আশে পাশে যারা থাকেন তারা মহাখালী থেকে ছেড়ে আসা “এনা” বাসে করে সুনামগঞ্জ চলে আসতে পারবেন। সুনামগঞ্জ সুরমা নদীর উপরে নির্মিত বড় ব্রীজের উপর নীলাদ্রি লেকে আসার মোটর সাইকেল পেয়ে যাবেন। প্রতি বাইকে ২ জন করে বসতে পারবেন। বাইকে ভাড়া নিবে ৫০০-৬০০ টাকা। সবচাইতে ভালো হয় সারা দিনের একতা বাইক রিজার্ভ করে নেয়া। একদিনের রিজার্ভ করলে আপনার খরচ হবে ১২০০-১৫০০ তাকা। বর্ষায় সুনামগঞ্জ থেকে লেগুনা বা সি এন জি করে তাহিরপুর বাজারে চলে আসবেন। এইখান থেকে বোট রিজার্ভ চলে আসবেন নীলাদ্রি লেক। আমাদের বাতান হাউজবোট সহ অন্যন্য বোট গুলো সারা বছরই চলাচল করে। হাউজবোটে বুকিং দিলে আপনাকে আর কষ্ট করে তাহিরপুর আসতে হবে না। সুনামগঞ্জ থেকেই আমাদের বোটে যাত্রা শুরু করতে পারবেন।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হয়েঃ ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে প্রতিদিন রাত ১১:০০ টায় হাওর এক্সপ্রেসের নামের একটি ট্রেন মোহনগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। সকালে এসে মোহনগঞ্জ পৌছায়। মোহনগঞ্জ ষ্টেশন থেকে অটো নিয়ে চলে যাবেন মধ্যনগর বাজার। শীতে মধ্যনগর থেকে ইজি বাইক নিয়ে চলে আসবেন নিলাদ্রী লেকে। সবচাইতে ভালো সুবিদা হচ্ছে বর্ষায়। মধ্যনগর থেকেই আপনি বোট / স্পিড বোট ভাড়া করে নীলাদ্রী লেক –এ আসতে পারবেন। বর্ষায় আরো একটা ভালো অপশান হচ্ছে বাতান হাউজবোট। বাতান হাউজবোট পুরটা বুকিং দিলেই মধ্যনগর বাজার থেকেই বাতান হাউজবোটে করে চলে আসতে পারবেন নীলাদ্রি লেক।

Niladri lake

কখন আসবেন নীলাদ্রি লেক

নীলাদ্রি লেক সারা বছরই ভ্রমণ করা যায়। বর্তমানে আধুনিক অনেক হাউজবোট থাকায় আপনি যেকোন সময় পরিবার নিয়ে চলে আসতে পারেন নীলাদ্রি লেকে। সাথে ভ্রমণ হয়ে যাবে অপার সৌন্দর্যের লিলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা ননি, বারিক্কা টিলা ও শিমুল বাগান।

কোথায় থাকবেন

টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনে রাত্রীযাপনের জন্য আপনার প্রথম পছন্দ হবে সময়ের সেরা হাউজবোট বাতান। এছাড়াও আরো অনেক হাউজবোট ও ট্রেডিশনাল বোট আছে রাত্রীযাপনের জন্য। এইখানে ভালো মানে হোটেল নাই। তাই হাউজ বোটেই রাত্রীযাপন নিরাপদ। তবে হোটেলে থাকতে চাইলে চুনা পাথরের কারখানার একটা পুরাতন গেষ্ট হাউজ আছে সেখানে রাত কাটাতে পারবেন। বড়ছড়া বাজারে কিছু গেষ্ট হাউজ আছে ২০০-৫০০ টাকার খরচ করে সেখানেও রাত কাটাতে পারবেন।

কোথায় খাবেন

হাউজবোটে থাকলে বোটেই বাহারি খাবারের আয়োজন থাকে। ট্যাঁকের ঘাট বাজারে কিছু মোটামুটি মানের খাবারের হোটেল আছে, সেখানেও খেতে পারবেন। বড়ছরা বাজারেও আছে। তবে ভালো মানের খাবার খেতে চাইলে হাউজবোট অথবা সুনামগঞ্জে গিয়ে খেতে হবে।

জরুরী পরামর্শ

নীলাদ্রি লেকের গভীরতা অনেক তাই লেকে নামলে অবশ্যই লাইফ জ্যাকেট পরে নিবেন। বর্তমানে লেকে নৌকা দিয়ে ঘুরা এবং কায়াকিং চালু হয়েছে, আপনি এইসব রাইড নেয়ার আগে যথেষ্ট পরিমান প্রস্তুতি নিয়ে নিবেন।

আরো পড়ুন

Scroll to Top